Tuesday, April 28, 2015

আজ তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন।রোববার রাত ১২টার দিকে শেষ হয় প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা। গত সপ্তাহে নির্বাচনী প্রচারে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও শেষ দিনে প্রতিদ্ধন্ধী প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার ছিল শান্তিপূর্ণ। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত নিজেদের সমর্থকদের নিয়ে শেষ মুহূর্তের ঝড়ো প্রচার চালান। তাদের সমর্থনে বের হওয়া খ- খ- মিছিলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম পরিণত হয় মিছিলের নগরীতে। সবার প্রত্যাশা, উৎসবমুখর পরিবেশেই দেশের দুই মহানগরীর নগরপিতা নির্বাচনে ভোট দেবেন ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৫৭৬ জন ভোটার।


এদিকে, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিও শেষ। এখন শুধু ভোট গ্রহণের অপেক্ষা। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা জানিয়ে সবাইকে সব ধরনের ভয়ভীতিমুক্ত থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এ দিন কোনো পাবলিক পরীক্ষা থাকলে কেন্দ্রগুলো ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীরা সাধারণ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
নির্বিঘ্নে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ গতকাল বলেছেন, অন্য যে কোনো নির্বাচনের তুলনায় এবার তিন-চারগুণ বেশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবে। তিন সিটির জন্য তিন ব্যাটালিয়ন সেনাসদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেনাসদস্যদের সঙ্গে থাকবেন। রিটার্নিং অফিসার ডাকা মাত্রই তারা সাড়া দেবেন। ভোট কেন্দ্রগুলোতে গতকাল থেকেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন শুরু হয়েছে। তিন সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আজ সকালেই প্রিসাইডিং অফিসারের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে মালপত্র পাঠানোর কাজ শুরু হচ্ছে।
র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিন সিটিতে ৫ হাজার র‌্যাব সদস্যও মোতায়েন থাকবে। ইসি কার্যালয়ের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্বাচনের পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১২ ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি প্রয়োজনে ইসির অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্টসংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে পারবে। মহাসড়কের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
সেনাসদস্যরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করবেন। সেনাসদস্যদের সঙ্গে ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও মোতায়েন করা হয়েছে। মিরপুর সেনানিবাসে ২ জন, পোস্তগোলা সেনানিবাসে ২ জন, ঢাকা সেনানিবাসে ৬ জন, চট্টগ্রামের দামপাড়া সেনানিবাসে ২ জন, হালিশহর সেনানিবাসে ২ জন এবং চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ২ জন- মোট ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবস্থান করবেন এবং সেনাসদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন।
এ ছাড়া প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন পুলিশ ও আনসার দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তিনি সিটিতে (১০৫ প্লাটুন) ৩ হাজার ৪০০ জন বিজিবি, ২৩৮ জন (৭ প্লাটুন) কোস্টগার্ড, র‌্যাবের ২৬৮টি টিম অর্থাৎ ২ হাজার ১৪৪ জন (৮ জনের টিম), পুলিশ ১০৫৬ জন মোতায়েন থাকছে। তিন সিটিতে ৮টি করে মোট ২৪ প্লাটুন বিজিবি সদস্যকে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে রাখা হয়েছে।
তিন সিটিতে জুডিশিয়াল ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৪৭৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট। তাদের মধ্যে ৩৩ জন জুডিশিয়াল এবং ৪৩৩ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক ও টেম্পো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা রয়েছে। ইতিমধ্যে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল হয়েছে। তবে ঢাকার ভেতরে চলাচলের জন্য মহাসড়কগুলো এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।

0 comments:

Post a Comment