Tuesday, July 7, 2020

মধু সমাচার - Honey

About – Ash Shefa Modhu Ghar
সম্প্রতি ইনবক্সে
ভাই এর সাথে মধু ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্ত আলাপের এক পর্যায়ে জানালেন তার আগে থেকেই মধু খাওয়ার অভ্যেস ছিলো, একসময়ে তার ডায়াবেটিস ধরা পড়ে, কিন্তু তিনি এখনো নিয়মিত মধু খেয়ে যাচ্ছেন। এবং তিনি নিয়মিত টেস্ট করে তার ডায়াবেটিস স্বাভাবিক পেয়ে আসছেন।
তিনি আমাকে বলেনঃ "অনেকে মধু পরীক্ষা অন্যভাবে। আমি পরীক্ষা করি ডায়বেটিস দিয়ে। যদি ভেজাল হয় ডায়বেটিস বাড়ে খাঁটি হলে উল্টো কমে"। তিনি আরোও বলেনঃ "তবে দুই চামচের বেশী খাওয়া উচিত না।"
খাটি মধু কিনতে হলে Ash Shefa Modhu Ghor এ যোগাযোগ করুন।
যদিও বহু শতাব্দী ধরেই পৃথিবীতে সাধারণ খাদ্য ও ঔষধি খাদ্য হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে বটে তবে ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায় মধু খাওয়া কতখানি নিরাপদ এ বিষয়ে নেট ঘেটে জানতে পারলামঃ মৃদু বিতর্ক থাকার কারনে নাকী ডায়াবেটিস রোগীরা মধু খেতে পারবেন কি পারবেন না এর উত্তরটা একেবারে সরল করে দেয়া কঠিন। কেননা ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর মধুর প্রভাব নিয়ে গবেষণার ফলাফল নিজেই দ্বিধাবিভক্ত।
কিছু গবেষণায় নাকী দেখা যায় মধু সাধারণ চিনির তুলনায় দ্রুত রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়ায়। সেই সাথে ইনসুলিন ক্ষরণের মাত্রাও বাড়ায়। ফলে দ্রুত সেই গ্লুকোজ আবার কমেও যায়। সেই সাথে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়াতেও মধুর উপকারিতা আছে, (এ কারনেই হয়তো ভাইজানের মধু সেবন করেও ডায়বেটিস বাড়ছে না)।
আবার ৩২ জন ডায়াবেটিস রোগীর ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় ( যদিও এ গবেষনাটি কখন কোথায় হয়েছে সে তথ্যটি কোথাও পাই নাই) দেখা যায় ২ টেবিল চামচ মধু ও ১ কাপ বা ১২৫ গ্রাম সাদা ভাত খাবার পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধির হার প্রায় সমান।
তবে দীর্ঘস্থায়ী গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে মধুর খুব বেশি উপকারিতা নেই। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় নাকী দেখা যায় ২ মাস মধু ব্যবহারের পর রক্তের HbA1c (এক প্রকার হিমোগ্লোবিনের ফর্ম যেটি শরীরের গ্লুকোজ ইউনিটগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে গঠিত হয়) এর পরিমাণ বেড়ে যায়।
আর কোন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ইচ্ছেমাফিক মধু সেবন করা মানে নিজের জন্য বড় ধরনের রিস্ক নেয়া। কেননা ডায়বেটিস রোগীর জন্য বেশীরভাগ খাদ্যই ইচ্ছেমাফিক খাওয়া যায় না। আর যেহেতু এক টেবিল চামচ মধুতে থাকে প্রায় ১৭ গ্রাম শর্করা, যার খাদ্যমান প্রায় ৬৪ কিলোক্যালোরি, যেখানে এক টেবিল চামচ বা ১২ গ্রাম চিনির খাদ্যমান ৪৯ কিলোক্যালোরি, সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মধু তো কোনো মিষ্টিদ্রব্যের ক্ষতির মতোই ক্ষতিকর হওয়ার কথা।
তবে মিষ্টিকারক ছাড়াও মধুর অন্য অনেক ওষুধি গুণ আছে। মধুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন রকম এন্টি অক্সিডেন্ট। আমাদের দেহে বিপাক ক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন জারক যৌগ বা ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হয়, যেগুলো দেহকোষের বিভিন্ন উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে কোষের ধ্বংস ত্বরান্বিত করে। বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ও প্রদাহের পেছনে এসব যৌগের ভূমিকা আছে। দেহকোষের অনিয়ন্ত্রিত ধ্বংস বা বৃদ্ধি ও কিছু ক্যান্সার সৃষ্টিতেও এসব যৌগ অনেকাংশেই দায়ী। এন্টি অক্সিডেন্ট এসব ক্ষতিকর যৌগের সাথে যুক্ত হয়ে এগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়, ফলে দেহ এগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়। আর এসব এন্টি অক্সিডেন্টের একটা ভালো উৎস হলো প্রাকৃতিক খাঁটি মধু। এতে বিভিন্ন জৈব এসিড ও ফেনলের মতো প্রয়োজনীয় এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়া গবেষণায় দেখা যায়, মধু রক্তে থাকা বিভিন্ন এন্টি অক্সিডেন্টের কার্যকারিতাও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মধুর এসব ওষুধি গুণের কথা বিবেচনা করলে মধু অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো। বিশেষ করে চিনি, সিরাপ বা অন্যান্য কৃত্রিম মিষ্টিদ্রব্যের তুলনায় মন্দ নয় মোটেই।
সুতরাং বলা যায়, এসব বিবেচনায় ডায়াবেটিস রোগীরা মধু একেবারেই খেতে পারবেন না, তা নয়। তবে তা খেতে হবে বুঝেশুনে।
মধু সকলের পক্ষে ঠিক নয়, যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে আনা দরকার। তবে যদি কারো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, নিয়মিত ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করেন তাহলে সামান্য পরিমাণ মধু প্রতিদিন খাওয়াই যায়, তবে সেটি হতে পারে এক দু টেবিল চামচ পরিমাণ। আর সেক্ষত্রে অবশ্যই অন্যান্য চিনি বা মিষ্টিজাতীয় দ্রব্য বাদ দিতে হবে। ব্যাক্তিগত চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের নিত্যদিনের রুটিনের সাথে মিল রেখে সেটি ব্যালান্স করা উচিৎ। অর্থাৎ কথা হলো যতটুকু মধু খাওয়া পড়বে তার সমতুল্য পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাদ্য ওই বেলা কম খেতে হবে। আর একসাথে বেশি পরিমাণ মধু কোনোভাবেই খাওয়া উচিত হবে না। এক চামচ মধু খাওয়ার জন্য প্রায় দেড় কাপ ভাত, ছোট একটি রুটি খাওয়া বাদ দিতে হবে। কেউ যদি এরূপ হিসাব মেনে নিয়ে মধু খেতে পারে তবে তার জন্য খুব ক্ষতিকর হবে না, এবং এটাই সবচাইতে নিরাপদ।
আর এমনটা করা যদি কোন ডায়াবেটিস রোগীর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায় তবে তার জন্য মধু বর্জন করাই ভালো।
আর যদি কোন ডায়বেটিক রোগী যদি মধু খান তবে নিশ্চিত হয়ে নেবেন যে সেটি খাঁটি মধু। খাঁটি মধুতে এক্সট্রা শর্করা থাকে না।
সবচেয়ে ভালো হয়, বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে নিলে, কেননা তিনিই রোগের অবস্থা বুঝে সর্বোত্তম পরামর্শ দিতে পারবেন। এই হলো মোদ্দা কথা।

Zaafar At Taiaar ভাইয়ের টাইমলাইন থেকে।

0 comments:

Post a Comment